সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন
বাংলা নিউজডে ডেস্ক : নিরস্ত্র এক কৃষ্ণাঙ্গ পুলিশি নির্যাতনে প্রাণ হারানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে গোটা যুক্তরাষ্ট্র। কারফিউ ও সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনা অমান্য করেই রাজপথে নেমে এসেছেন হাজার হাজার মানুষ।
জানা যায়, মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি রেস্তোরাঁয় নিরাপত্তাকর্মীর কাজ করতেন ৪৬ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েড। গত ২৫ মে সন্ধ্যায় প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। এসময় এক পুলিশ কর্মকর্তা প্রকাশ্যে রাস্তায় মাটিতে ফেলে হাঁটু দিয়ে গলা চেপে ধরেন জর্জের। এভাবে অন্তত আট মিনিট তাকে মাটিতে চেপে ধরে রাখা হয়।
এক প্রত্যক্ষদর্শীর তোলা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, জর্জ ফ্লয়েড নিঃশ্বাস না নিতে পেরে কাতরাচ্ছেন এবং বারবার একজন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তাকে বলছেন, ‘আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি না।’ এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হয় মুহূর্তেই। প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন হাজারও মানুষ।
প্রথম দিকে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ থাকলেও ধীরে ধীরে সহিংসতায় রূপ নেয়ে তা। বিক্ষোভকারীদের দেয়া আগুনে মিনিয়াপোলিসের প্রধান পুলিশ স্টেশন পুড়ে গেছে। বিক্ষোভকারীদের দমাতে টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে পুলিশ, গ্রেফতার করা হয়েছে অসংখ্য মানুষকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, মিনেসোটায় শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ ইতোমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশজুড়ে। ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, জজির্য়া, শিকাগো, ইলিনয়েস, আইওয়া, ইন্ডিয়ানা, কেন্টাকি, লুইজিয়ান, নিউইয়র্ক. ম্যাসাচুসেটস, মিশিগান, নেভাডা, নর্থ ক্যারোলিনা, ওহিও, টেক্সাস, ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভের আগুন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাতে লাস ভেগাসে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করেন। এসময় সেখান থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিক্ষোভের সুযোগে আটলান্টার লেনক্স শপিংমলে হামলা চালিয়ে লুটপাট চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। এছাড়া সেখানকার একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভ দমাতে জর্জিয়ার ফুল্টন কাউন্টিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন গভর্নর ব্রায়ান কেম্প। অন্তত ৫০০ নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে আটলান্টা জুড়ে।
লস অ্যাঞ্জেলস পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাতের সহিংসতায় তাদের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। যেকোনও ধরনের অবৈধ জনসমাবেশ এড়িয়ে সবাইকে ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে সেখানকার প্রশাসন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্তত সাড়ে তিনশ’ বাড়তি নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে মিনিয়াপোলিসে। এছাড়া, পুরো সপ্তাহজুড়েই শহরটিতে কারফিউ জারি করা হয়েছে। তবে কারফিউ অমান্য করেই মিনিয়াপোলিসের রাস্তায় বিক্ষোভ করেছেন শত শত মানুষ।
বার্তাসংস্থা এপি জানিয়েছে, মিনিয়াপোলিসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখতে মিলিটারি পুলিশের বেশ কয়েকটি ইউনিটকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
আল জাজিরা বলছে, কেন্টাকির লুইসভিলে বিক্ষোভকারীরা শহরের হল অব জাস্টিসে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। এছাড়া, নিউইয়র্কেও পুলিশ-বিক্ষোভকারী সংঘর্ষ হয়েছে। হোয়াইট হাউসের বাইরে বিক্ষোভ হওয়ায় ভবনটি পুরোপুরি লকডাউন করে দেয়া হযেছে। সূত্র: সিএনএন, এপি, আল জাজিরা
ভিডিও লিংক:
আমেরিকা, বাংলাদেশ এবং বিশ্বের সর্বশেষ খবরের জন্য বাংলা নিউজডের ওয়েবসাইটে আসুন এবং আমাদের Bangla Newsday ফেসবুক পৃষ্ঠাটি সাবস্ক্রাইব করুন।